বীরগঞ্জে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ে তালা
দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় :
১৮-০৮-২০২৪ ০৭:০২:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১২-১০-২০২৪ ১০:৫২:৫৯ অপরাহ্ন
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার সকালে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিদ্যালয়ের অফিস ও শ্রেণিকক্ষে ওই তালা ঝুলিয়ে দেন। একই সঙ্গে বিদ্যালয়সংলগ্ন বাংলাবাজার এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছেন তাঁরা।
ঘটনার পর থেকে মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য শফিকুল ইসলাম, ফারুক ইসলাম, বদিউল ইসলাম, হামিদা খাতুন, রেবা আক্তার। এ সময় শতাধিক অভিভাবক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, গত ২৪ জুন বিদ্যালয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে পাঁচজন অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছেন। পরে অভিভাবক সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সভাপতি নির্বাচন করা হবে।
সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন রকিবুল ইসলাম ও মোস্তাক শামীম। অধিকাংশ অভিভাবক সদস্য মোস্তাক শামীমকে সভাপতি করার পক্ষে মত দেন; কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাঁর অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে তাঁর শ্যালক রকিবুল ইসলামকে সভাপতি করার পাঁয়তারা করছেন। অথচ বিদ্যালয় থেকে তাঁর বাড়ি প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। অন্যদিকে মোস্তাক শামীমের বাড়ি বিদ্যালয়ের লাগোয়াবক্তারা বলেন, এই বিদ্যালয়ে ৭-৮ বছর আগেও ৪০০ শিক্ষার্থী ছিল। প্রধান শিক্ষক ও তাঁর কয়েকজন অনুসারী শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়টি আজ দৈন্যদশায় পরিণত হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না। অভিভাবকদের মূল্যায়ন করেন না।
মুঠোফোনে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সদস্য ফারুক ইসলাম বলেন, ‘গত ২৭ জুন কমিটিতে নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের নিয়ে প্রধান শিক্ষক উপজেলা মাধ্যমিক স্যারের কাছে যান। সেখানে আমাদের কাছ থেকে খাতায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। রাকিবুল ইসলামকে সভাপতি ঘোষণা করলে আমরা তাৎক্ষণিক মানববন্ধন করে প্রতিবাদ করি।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ৩০ জুন বিষয়টির সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে পারি, কোনো ভোট হবে না। রাকিবুল ইসলামই সভাপতি থাকবেন। বিষয়টি মানতে না পেরে বেশির ভাগ অভিভাবক সদস্য ক্ষিপ্ত হয়েছেন এবং আজ বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান ২ জুলাই পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ। আজ সোমবার বিদ্যালয়ে কোনো পাঠদান হয়নি। অভিভাবকেরা তালা দিলে আমরাও সবাই চলে যাই।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আলী শাহ বলেন সাধারণ অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে ছয়জন রকিবুল ইসলামকে সমর্থন দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে; কিন্তু পরে তাঁরা মানতে রাজি হননি। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়। আজ (সোমবার) জানতে পারি কয়েকজন অভিভাবক সদস্য বিদ্যালয়ে তালা দিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও ফজলে এলাহী বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি সভাপতি নির্বাচন নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। উদ্বুদ্ধ সমস্যা নিরসনে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে সভা আহ্বান করে ৩০ জুন বিষয়টির সমাধানের জন্য বলা হয়েছিল কিন্তু প্রধান শিক্ষক সেটি না করে মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন। আজ সোমবার বিকেলে শিক্ষা কর্মকর্তাকে এমন পরিস্থিতির কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV
কমেন্ট বক্স